সোমবার, মে 20, 2024

বাংলাদেশের উদ্ভাবিত বারি কফি বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা, রফতানি বেশি দূরে নয়!

Must read

- Advertisement -
বাংলাদেশের উদ্ভাবিত বারি কফি বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা, রফতানি বেশি দূরে নয়! | সারা বিশ্বেই কফি অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয় হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশে ব্যবহৃত কফির প্রায় পুরোটা বর্তমানে আমদানি করা হলেও, সেদিন খুব দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশে উৎপাদিত কফি জয় করবে বিশ্বের রফতানি বাজার। আর এ সম্ভাবনা দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তাদের উদ্ভাবিত হাইব্রিড বারি কফি-১ জাতের কফি শুধু গুণে ও মানেই অনন্য নয়, একই সঙ্গে উচ্চ ফলনশীল; ফলে এটি কৃষকদের জন্য অর্থকরীও বটে।

সারা বিশ্বেই কফি অত্যন্ত জনপ্রিয় পানীয় হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। দেশে ব্যবহৃত কফির প্রায় পুরোটা বর্তমানে আমদানি করা হলেও, সেদিন খুব দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশে উৎপাদিত কফি জয় করবে বিশ্বের রফতানি বাজার। আর এ সম্ভাবনা দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা। তাদের উদ্ভাবিত হাইব্রিড বারি কফি-১ জাতের কফি শুধু গুণে ও মানেই অনন্য নয়, একই সঙ্গে উচ্চ ফলনশীল; ফলে এটি কৃষকদের জন্য অর্থকরীও বটে।

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে পিকেএসএফ ভবনে আয়োজিত এক প্রদর্শনীতে চোখে পড়লো বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের একটি স্টল। এতে কফি গাছসহ দেশে উৎপাদিত কাঁচা কফি থেকে পাওয়া রোস্টেড কফি বিনও ছিল। সেখানে আগ্রহীদের জন্য ছিল এ কফির স্বাদ নেয়ারও সুযোগ।

বাংলাদেশে কফি চাষের সম্ভাবনা

বাংলাদেশের পার্বত্য অঞ্চলে রয়েছে কফি চাষের ব্যাপক সম্ভাবনা। পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে ৯২ শতাংশ উঁচু ভূমি, যা কফি চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।

বিজ্ঞানীরা এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে খাগড়াছড়িতে অবস্থিত পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে গত ২০ বছর ধরে কফি চাষ ও তা বাজারজাতকরণ নিয়ে গবেষণা করে আসছে। এ গবেষণার পথ ধরে কফির উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাত বারি কফি-১ উদ্ভাবনে সফলতাও অর্জন করেন তারা।

 

কফি  চাষের জন্য পাহাড়ি ভূমি আদর্শ

খাগড়াছড়িতে পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের কফি-কাজুবাদাম চাষ প্রকল্পের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা সৌরভ মারমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের নটি উপজেলায় এ ‘বারি কফি-১’ জাতের কফি চাষ করা হচ্ছে। কৃষকদের এ কফির চারা দেয়া হয়েছে এবং এ কফি চাষে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মাটি এ কফি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। কারণ পাহাড়ি এলাকায় ভূমি উঁচু। তাই এখানে পানি জমে না।

No description available.
 প্রদর্শনীতে আগ্রহীদের জন্য ছিল এ কফির স্বাদ নেয়ারও সুযোগ।

তিনি বলেন, এ কফি গাছ চাষ করতে বাড়তি জমিরও প্রয়োজন হয় না। কারণ আমবাগান, লিচু বাগান কিংবা অন্যান্য বাগানের গাছের ছায়ায় এ কফি গাছ চাষ করা সম্ভব।

এ কফি চাষ ও বাজারজাতকরণে তাদের পক্ষ থেকে কৃষকদের প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেয়ার করার কথা জানান সৌরভ মারমা।

 

বিশ্বের দ্বিতীয় সেরা কফি ‘বারি কফি-১’

বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের কাজুবাদাম-কফি গবেষণা উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. আলতাফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের এ কফি বিশ্ব র‌্যাংকিংয়ে দ্বিতীয় সেরা হয়েছিল। অন্যান্য আমদানি করা কফির থেকে বারি কফি-১-এ ক্যাফেইন পরিমিত মাত্রায় রয়েছে, ফ্লেভারটাও অনেক বেশি উন্নত।

তিনি বলেন, বিদেশ থেকে আসা কফিতে অনেক সময় আসল ফ্লেভারটা পাওয়া যায় না। দেশীয় এই কফিতে আসল ফ্লেভার পাওয়া যায়। দেশি জাতের এ কফির চাষ ছড়িয়ে দেয়া গেলে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে; অন্যদিকে রফতানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ও করা যাবে।

No description available.
অর্থনৈতিকভাবেও এ কফি অত্যন্ত লাভজনক।

আলতাফ হোসেন আরও বলেন, দেশের আবহাওয়া এ কফি চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এটি চাষ করতে বাড়তি জমিরও প্রয়োজন হয় না। বাগানে অন্য গাছের মাঝেই চাষ করা যায়। এছাড়া যেসব পতিত জমিতে চাষাবাদ হয় না, সেখানেও এই কফির আবাদ করা যায়। বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলের পতিত পাহাড়ি জমিতে এ কফির গাছ খুবই ভালো হয়।

এ কফি অর্থনৈতিকভাবেও অত্যন্ত লাভজনক হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ কফির চাষ করে এক বিঘা জমি থেকে বছরে তিন লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। একটি গাছ থেকে বছরে সর্বোচ্চ ২৫ কেজি পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।

দেশে ও বিশ্বে কফির বাজার

বর্তমানে দেশে কফির চাহিদা প্রায় দুই হাজার মেট্রিক টন। বছরে কেনাবেচা হয় ৬০০ কোটি টাকার কফি। অন্যদিকে বিশ্বে বছরে এক কোটি টন কফি বিন উৎপাদিত হয়। বিশ্বে কফির রফতানি বাজার সাড়ে চার হাজার কোটি ডলারের। দেশেও ধীরে ধীরে বাড়ছে কফির চাষ। ২০২২ সালেও দেশে ৬২ টন কফি উৎপাদিত হয়।

- Advertisement -
- Advertisement -

More articles

- Advertisement -

Latest article